আলোচ্য বিষয়:
হানিকম্ব কি?
হানিম্বের ক্ষতিকর
প্রভাব, হানিকম্বের
কারণ ও
প্রতিকার এবং
হানিকম্ব হলে
করনীয় সম্পর্কে।
===========================================
[যারা ধৈর্য্য
ধরে রচনা
পড়তে পছন্দ
করে তাদের
জন্য 😍😍].........
✅ হানিকম্ব কি?
বাংলায় যদিও
Honeycomb মানে মৌচাক,
কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং
ভাষায় ঢালাই
এর পর
কংক্রিটের মধ্যে
ছোট ছোট
ফোকর বা
গর্তের সৃষ্টি
হওয়াকে হানিকম্ব
বলে।
মূলত কোর্স
এগ্রিগেট সমূহের
মধ্যস্থ ফাঁকা
পুরনের জন্য
কংকিটে ফাইন
এগ্রিগেট ব্যবহার
করা হয়,
কোন কারনে
যদি এই
ফাঁকে ফাইন
এগ্রিগেট পৌঁছাতে
না পারে
কিংবা কোর্স
এগ্রিগেট থেকে
আলাদা হয়ে
যায় তবে
হানিকম্ব বা
এয়ার ভয়েডের
সৃষ্টি হয়।
......................................................................................
✅ হানিকম্বের ক্ষতিকর
প্রভাব:-
এক কথায়
হানিকম্ব কংক্রিটকে
ভঙ্গুর ও
দুর্বল করে
তোলে, কংক্রিটের
মধ্যে ৫%
এয়ার ভয়েড
বা হানিকম্বের
উপস্থিতি কংক্রিটের
শক্তিকে ২৫-৩০% কমিয়ে দেয়।
তাছাড়া হানিকম্বের
মধ্যস্থ ফাঁকা
দিয়ে আদ্রতা
প্রবেশ করে
স্টিলে করোশনের
সৃষ্টি করে,
যার দরুন
স্টিল তার
আল্টিমেট স্ট্রেন্থ
বহনে ব্যর্থ
হয়, ফলশ্রুতিতে
কাঠামো ফেইল
করে।
......................................................................................
✅ হানিকম্বের কারণ
ও প্রতিকার:-
কংক্রিটে অনেকগুলো
কারণে হানিকম্বের
সৃষ্টি হতে
পারে, তন্মধ্যে
উল্লেখযোগ্য কিছু
কারণ হলো;
✅
Leakage:-
হানিকম্বের জন্য
আমি ১
নাম্বারে দায়ী
করবো সাটার
এর লিকেজ
কে। অধিকাংশ
ক্ষেত্রেই দেখা
যায় ভাইব্রেটিং
এর ফলে
সাটারের লিকেজ
বা ফোকর
দিয়ে পানি
কিংবা বালি
সিমেন্টের তরল
মর্টার বের
হয়ে গিয়ে
হানিকম্বের সৃষ্টি
করে [হানি
সিংয়ের দেখা
মিলে😍] ।
❎ প্রতিকার:-
☑️
এক কথায়
সাটারে কোন
লিকেজ থাকতে
পারবেনা, কাঠ
বা স্টিল
সাটার যাই
ব্যবহার করেন
না কেন
সাটারকে ভালভাবে
এয়ার টাইড
করতে হবে,
বিশেষ করে
ছাদের বিম
কলামের কোবলাগুলোকে
ভালভাবে লিকপ্রুভ
করতে হবে।
☑️
কলামের ক্ষেত্রে
কিকার এবং
ফাস্ট লিফটের
কলামের মাথায়
শক্তকরে Jute Tape/ Foam বেধে নিতে
হবে।
☑️
স্টিল সাটারের
জয়েন্টে Jute Tape/ Foam ব্যবহার করে
নাট-বোল্টগুলোকে
শক্ত করে
জ্যাম দিতে
হবে যেন
কোন ফাঁকা
না থাকে।
☑️
কাঠের সাটারের
বড় গ্যাপে
রূপভান সিট
দিতে হবে,
ছোটখাটো গ্যাপগুলো
কাগজ দিয়ে
আটকিয়ে দিন।
......................................................................................
Honeycomb |
দুই নাম্বারে
বলবো প্রপার
ভাইব্রেটিং এর
অভাব। ভালভাবে
ভাইব্রেটিং না
করলে কিংবা
ভাইব্রেটরের নজেল
সব জায়গায়
পৌঁছাতে না
পারলে কোর্স
এগ্রিগেটের গ্যাপগুলোতে
ফাঁকা থেকে
যায় যার
ফলশ্রুতিতে এয়ার
ভয়েড বা
হানিকম্বের সৃষ্টি
হয়,যা
মূলত ফাইন
এগ্রিগেট দিয়ে
ফিলআপ হবার
কথা।
❎ প্রতিকার:-
☑️
এক্ষেত্রে বলবো
বাচ্চাদেরকে খাওয়ানোর
সূত্র এপ্লাই
করতে পারেন,
অল্প অল্প
খাওবেন তবে
বারে বারে।
মানে হলো
ভাইব্রেটর মারবেন
অল্প সময়
ধরে তবে
ঘন ঘন,
অর্থ্যাৎ প্রতি
১/ ১.৫ ফিট পর
পর ভাইব্রেটর
মারবেন তবে
অল্প সময়ের
জন্য। বেশি
মারলে সেগ্রিগেশন
হতে পারে।
☑️
নজেল সব
সময় সোজা
বা 45 ডিগ্রি এ্যাংগেলে
রাখবেন।
☑️
অল্প রিইনফোসমেন্টের
ক্ষেত্রে বা
হালকা মেম্বারে
১/১.৫”
নজেল এবং
অধিক রিইনফোর্সমেন্ট
বা বড়
মেম্বারের জন্য
২/২.৫”
নজেল ব্যবহার
করুন। দেখবেন
ভাইব্রেটিং এর
তোপে যেন
সাটার যেন
ফেল না
করে আবার
😄!
......................................................................................
✅
Segregation:-
কংক্রিটের মধ্যস্থ
Coarse Aggregate থেকে Fine Aggregate সমূহ আলাদা
হয়ে যাওয়াকে
সেগ্রিগেশন বলে।
সেগ্রিগেশন বিভিন্ন
কারণে হতে
পারে, যেমন
খুব উচু
থেকে মসলা
ফেললে কিংবা
কংক্রিটের মধ্যে
খুব বেশি
পরিমানে পানি
দিয়ে দিলে,
অথবা অধিক
ভাইব্রেটিং এর
ফলে হতে
পারে। Segregation এর ফলে কোর্স
এগ্রিগেট সমূহ
ভারী বিধায়
নিচে চলে
যায়, আর
ফাইন এগ্রিগেট
সমূহ কিছুটা
হালকা বলে
উপরে ভেসে
থাকে, যেমনটা
আমরা হোস্টেলের
পাতলা মসূর
ডালের বেলায়
দেখে থাকি
😂।
❎ প্রতিকার:-
☑️
এক লিফটে
কখনো ৫
ফিটের বেশি
উচ্চতায় কাস্টিং
করা যাবেনা।
☑️
মসলাকে খুব
বেশি উচু
থেকে ফেলা
যাবেনা।
☑️
কংক্রিটকে কখনোই
ভাইব্রেটর দিয়ে
ঠেলে দুরে
নিতে দিবেন
না, এতে
করে মসলা
পাথর আলাদা
হয়ে যায়।
☑️
সর্বপরি পানিকে
নিয়ন্ত্রন করতে
হবে।
......................................................................................
✅ Water
Cement Ratio:-
কাস্টিং এ
পানি খুব
বেশি দিলে
যেমন সেগ্রিগেশনের
সৃষ্টি হয়,
তেমনি প্রয়োজনের
তুলনায় খুব
কম দিলে
কংক্রিট মিক্সার
অনেকটা হার্ড
হয়ে যায়
যাকে বলে
Low Workability of Concrete, যার ফলে
মিক্সিংকে ভাইব্রেটিং
করেও নাড়ানো
যায়না, এ
জন্যই ভাইব্রেটিং
করার পরও
হানিকম্ব দেখা
মিলে।
❎ প্রতিকার:-
☑️
ঢালাইয়ের পূর্বে
সব সময়
কোর্স এগ্রিগেট
সমূহকে ভিজিয়ে
নিতে হবে।
☑️
সর্তকতার সহিত
পানি সিমেন্ট
অনুপাত মেইনটেন
করতে হবে
যাতে কংক্রিটকে
সহজে Pouring করা যায়।
☑️
একই ভাবে
স্ল্যাম্পকেও মেইনটেন
করতে হবে,
ইহা ১০০/১২৫ এর মধ্যে
রাখলে ভাল
হয়।
☑️
W/c Ratio অনেকটা আবহাওয়ার
উপর Vary করে, নরমাললি ইহা
.35 to .5 [Avg. 22.5 Ltr] রাখলে হয়,
তবে বৃষ্টি
হলে যেমন
পানি কম
রাখবে তেমনি
খুব গরমে
আবার বেশি
লাগতে পারে।
......................................................................................
✅ Well
Graded Aggregate:-
খোয়ার সাইজ
খুব বেশি
বড় হওয়ার
দরুনও হানিকম্ব
হতে পারে।
কংক্রিটিং Aggregate সমূহ Well Graded হওয়া বাঞ্ছনীয়,
যাতে ৩/৪”
এর সাথে
নির্দিষ্ট অনুপাতে
১/২” মিক্সিং
থাকে। শুধুমাত্র
বড় সাইজ
[৩/৪"]
ব্যবহার করলে
কোর্স এগ্রিগেটসমূহের
মধ্যে ফাঁকা
থেকে যায়
যা হানিকম্বের
সৃষ্টি করে।
❎ প্রতিকার:-
☑️
ব্রিক চিপসের
ভাঙানোর সময়
খেয়াল রাখতে
হবে খোয়ার
সাইজ যেন
খুব বেশি
বড় না
হয়, নাহলে
আপনাকে নির্দিষ্ট
রেশিও থেকেও
বেশি বালি
ব্যবহার করতে
হবে।
☑️
পাথরের বেলায়
চেষ্টা করতে
হবে Well Graded নিয়ে আসতে.
না হলে
আলাদা ভাবে
কিছু ১/২”
[পাই পাথর]
নিয়ে আসতে
হবে।
......................................................................................
✅
Concreting Pouring:-
অনেক সময়
দেখা যায়
মিস্ত্রিরা পরিশ্রমের
ভয়ে শুধু
একদিক থেকে
মসলা ফেলতে
থাকে, তা
পরবর্তীতে ভাইব্রেটর
দিয়ে অন্য
পার্শ্বে ঠেলে
নিতে চেষ্টা
করে, অনেক
সময় নিচের
দিকে আটকিয়ে
গেলে বা
ভাইব্রেটরের নজেল
পৌঁছাতে না
পারলে ভয়েডের
সৃষ্টি হয়।
❎ প্রতিকার:-
☑️
এ ক্ষেত্রে
আপনাকে চারদিক
থেকে সমান
ভাবে মসলা
ফেলতে হবে
এবং সাথে
সাথে ভাইব্রেটিং
ও করে
আসতে হবে,
ভাল হবে
মাঝে মাঝে
সাটারে হালকা
টোকা দিলে।
......................................................................................
✅
Casting Ratio এবং Proper Mixing:-
ইহা খুবই
গুরুত্বপূর্ন, উপাদানসমূহের
যথাযথ আনুপাতিকরনের
অভাবে অর্থ্যাৎ
যদি নির্দিষ্ট
আনুপাতিক হারে
এগ্রিগেটসমূহ ব্যবহার
না করা
হয় কিংবা
প্রয়োজনের তুলনায়
বালি কম
দিলে অথবা
পাথর বেশি
দিলে কংক্রিটে
হানিকম্বের সৃষ্ট
হতে পারে।
আবার প্রপারলি
মিক্সিং না
হওয়ার ফলে
দেখা যায়
শুরুর দিকের
মসলায় পাথরের
উপস্থিতি বেশি
থাকে, আবার
শেষের দিকে
বালির পরিমান
বেশি থাকে,
ফলে কলামের
নিচের দিকে
হানিকম্বের সৃষ্টি
হয়।
❎ প্রতিকার:-
☑️
Casting Ratio ঠিকভাবে মেইনটেন
করতে হবে।
☑️
খোয়া ও
বালির জন্য
একই মাপের
টুকরি বা
কড়াই ব্যবহার
করতে হবে,
বিশেষ করে
খেয়াল রাখতে
হবে বালির
পরিমান যেন
কম না
থাকে।
☑️
সবশেষে মসলাকে
মেশিন থেকে
ফেলার পর
ভেলচা দিয়ে
একবার নেড়ে
নিতে হবে।
বি.দ্র:
কাস্টিং শুরুর
পূর্বে অবশ্যই
অবশ্যই সাটারকে
ভিজিয়ে নিবেন।
===========================================
✅ হানিকম্ব হল
করনীয়:-
সবকিছু ঠিকঠাক
ভাবে করার
পরও যদি
আবারো হানি
সিং 😄 এর দেখা মিলে
তবে বুঝতে
হবে আপনার
উপর শনির
কালো দৃষ্টি
পড়েছে❗️ যাই
হোক যদি
কোন কলামে
খুব বেশি
হানিকম্ব চলে
আসে যা
রিপেয়ার করা
সম্ভব নয়
তবে কি
করা লাগবে
তা আর
বলার অপেক্ষা
রাখেনা, যদি
রিপেয়ারেবল হয়;
প্রথমেই সকল
আগলা বা
লুজ ম্যাটারিয়ালকে
হালকা হালকা
আঘাত করে
খুলে ফেলুন,
গর্ত বড়
হোক সমস্যা
নেই, লুজগুলো
থাকলে সমস্যা
হবে।রএগুলোকে ভালকরে
পরিষ্কার করে
পানি দিয়ে
ভিজাতে থাকুন।
এই গর্তগুলোকে
আপনি দুইভাবে
ফিলাপ করতে
পারেন;
1️⃣ 1:1 অনুপাতে সিমেন্ট
ও সিলেট
বালির মসলা
বানিয়ে নিন,
এর পর
যত শক্তি
আছে তা
দিয়ে গর্তে
ঢুকিয়ে দিন
😠, তবে এর
পূর্বে গ্রাউটিং
করে নিবেন।
2️⃣ যদি আপনি
ভাল ফল
পেতে চান
তবে বাজারে
বিভিন্ন কোম্পানীর
Concrete Repair Materials পাওয়া যায়
যা মূলত
Epoxy Based Non-Shrinkage Filler Materials [Grouting], এগুলো খুবই
খুবই হাই
স্ট্রেন্থ সম্পন্ন।
সেগুলো এনে
প্যাকেটের নির্দেশনা
অনুযায় ব্যবহার
করুন।