প্লাস্টারের উদ্দেশ্য, প্রকারভেদ এবং প্লাস্টারের পূর্বে করণীয় সম্পর্কে।

আলোচ্য বিষয়: প্লাস্টারের উদ্দেশ্য, প্রকারভেদ এবং প্লাস্টারের পূর্বে করণীয় সম্পর্কে।
===============================================
🔵 প্লাস্টার কি তা সবাই জানেন, এখন প্রশ্ন হলো প্লাস্টার কেন করা হয়?
✔ যে কারণে প্লাস্টার করা হয়;
☞ ইট বা আর.সি.সি সারফেসের অমসৃন পৃষ্ঠকে মসৃন ও সৌর্ন্দয বর্ধনের জন্য।
☞ আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাব হতে কাঠামোকে রক্ষা করার জন্য।
☞ পেইন্টিং এর জন্য উত্তম বেইজ/ সারফেস প্রদানের জন্য।
☞ স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য। সর্বপরি অসমতল বা উঁচু নিচু পৃষ্ঠকে সমতল করে নির্মান কাজের ত্রুটি ঢেকে দেওয়ার জন্য প্লাস্টার করা হয়।
………………………………………………………………………
🔵 প্লাস্টারের প্রকারভেদ:-
প্লাস্টারের কাজে ব্যবহৃত উপকরণের উপর ভিত্তি করে প্লাস্টারকে নিন্মোক্ত কয়েক ভাগে বিভক্ত করা যায়, যেমন;
☞ লাইম প্লাস্টার: চুন+বালি+পানি।
☞ সূরকি প্লাস্টার: চুন+সুরকি+পানি।
☞ লাইম সুরকি প্লাস্টার: চুন+সুরকি+বালি+পানি।
☞ সিমেন্ট প্লাস্টার: সিমেন্ট+বালি+পানি।
☞ মাড প্লাস্টার: মাটি+গোবর/ কাঠের গুড়া/ ধানের তুষ।
☞ মোজাইক প্লাস্টার: স্টোন চিপস+সিমেন্ট+ পানি।
এছাড়াও বর্তমানে Premix/ Ready mix টাইপের কিছু প্লাস্টার পাওয়া যায়, যা সাধারন প্লাস্টারের চাইতে অধিক টেকসই, মজবুত ও শক্তিশালী।


………………………………………………………………………
🔵 আমরা আজকে আলোচনা করবো সিমেন্ট স্যান্ড প্লাস্টার নিয়ে।প্লাস্টারের পূর্বে যা করতে হবে;
✔ Checking Door Frame [চৌকাঠ] Position:-
এই বিষয়টা নিয়ে পূর্বে একদিন আলোচনা করেছিলাম, দরজার ফ্রেম বা চৌকাঠ কে এমনভাবে সেট করতে হবে যেন তা প্লাস্টারের সাথে মিলে যায় অর্থ্যাৎ প্লাস্টার এবং চৌকাঠ একই লেভেলে বা #ফ্ল্যাশে থাকে। সুতরাং চৌকাঠ বসানোর সময়েই এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।
☞ চৌকাঠ ও প্লাস্টার সব সময় যে একই লেভেলে থাকতে হবে এমন কথা নেই, চৌকাঠের প্রস্থ বেশি হলে তা অপসেট আকারেও বর্ধিত থাকতে পারে।
✔ Pipe Wearing:-
প্লাস্টারিং শুরুর পূর্বে পাইপ ওয়্যারিং এর কাজ শেষ করে নিতে হবে, যেমন ইলেকট্রিক, প্লাম্বিং, গ্যাস লাইন ইত্যাদি। এখানে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে ইলেকট্রিক এর MK Box/ SDB বক্সগুলো এমন ভাবে সেটিং করতে হবে যেন তা প্লাস্টারের সারফেসের সাথে #মিলে যায়। কিছুটা ভিতরে থাকুক সমস্যা নেই, কিন্তু তা সারফেস থেকে অফসেট হয়ে থাকলে দেখতে খুবই বিশ্রি লাগবে।
✔ RCC Surface Chipping (চিপিং):-
RCC সারফেসের সাথে প্লাস্টারের উত্তম বন্ডিং সৃষ্টির জন্য চিপিং এর বিকল্প নেই, চিপিং এর ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে ইহা যেন ৩/৪” থেকে ১” এর মধ্যে থাকে এবং ১ থেকে ২ মিলি গভীর হয়। সবসময় চেষ্টা করবেন কাজ শুরুর পূর্বেই চিপিং সেরে ফেলতে কারণ প্লাস্টারের সময় চিপিং করা সম্ভব হয়না, এর দুটো কারণ;
☞ এই কাজের জন্য রাজ মিস্ত্রিগন প্রোফেশনাল নন।
☞ তাদের নিকট সেই ধরনের যন্ত্রপাতিও [বাসুলা] থাকেনা, তারা ধার বিহীন [ভোঁতা] বাসুলা দিয়েই কোন রকম কাজ সেরে ফেলতে চায়😃।
✔ Cleaning & Water Spraying:-
প্লাস্টারের আগের দিন ব্রিক ওয়াল বা আর.সি.সি সারফেস কে এমনভাবে ভিজাতে হবে যেন তা সিমেন্ট মসলা থেকে সাথে সাথেই #পানি শোষন করতে না পারে, একইভাবে অত্যাধিক ভিজার কারণে যেন পড়ে না যায়। কম ভিজালে কাজ করতে যেমন অসুবিধে হবে, তেমনি বেশি আদ্র থাকলেও মিস্ত্রিরা #ভূরা [ড্রাই মর্টার] ইউজ করতে চাইবে, তবে কথা একটাই ভিজানোর বিকল্প নেই যদি কাজের কোয়ালিটি ভাল চান।
☞ বাহিরের কিংবা ভিতরের দেওয়ালে শ্যাওলা বা লুজ ময়লা থাকলে তা প্লাস্টারের পূর্বে তারের ব্রাশ/ওয়্যার ব্রাশ/ সিমেন্টের বস্তা দিয়ে ঘষে #পরিষ্কার করে নিতে হবে।
✔ Sand Screening/ বালি চালা:- 
আমরা জানি বালিতে সাধারনত বিভিন্ন ধরনের অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে, যেমন মাটি, কয়লা, কাঠ, পাতা, ময়লা আবর্জনা ইত্যাদি। তাই কাজ শুরুর পূর্বে অবশ্যই অবশ্যই বালিকে #চেলে নিতে হবে, সাধারনত বালি চালার জন্য #6 নাম্বার চালনী [Opening 3-3.5mm] ব্যবহার করে থাকি।
☞ বালি প্রোপারলি চালা না হলে প্লাস্টারের পরে গাত্রে কাঠ, কয়লা বা কালো দানাগুলো ভেসে উঠবে, যা রং এর জন্য খুবই ক্ষতিকর।
✔ Sand Washing/ বালি ধৌত করা:-
কাজের পূর্বে বালিকে ধুয়ে নেওয়া উত্তম, এতে করে বালিতে মিশ্রিত #লবনের সহিত হালকা ওজনের অপদ্রব্যগুলোও দূর হয়ে যাবে। আপনারা নিশ্চয় Efflorescence বা পুষ্পায়নের [কেউ আবার পুষ্পায়ন বলতে বাগান করা বুঝিয়েন না 😃] নাম শুনেছেন? প্লাস্টারের পর এর গাত্রে লবনের ফেনা বা ফোমের উৎপত্তি ঘটাকে Efflorescence বলে, বালি ধোয়ার মাধ্যমে ইহা অনেকটা রোধ করা সম্ভব।
☞ আবহাওয়ার [লবনের] ক্ষতিকর প্রভাব থেকে প্লাস্টারকে রক্ষা করার জন্য বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল পাওয়া যায়। শুনেছিলাম আগের দিনে নাকি হাউজের পানির সাথে তেতুল মিশ্রিত করে দিত লবনের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য, যদিও আমি কখনো করিনি😃।
✔ Mixing Ratio:-
প্লাস্টারের বালি ১:৪ রেশিওতে করা উত্তম, তবে মালিক পক্ষকে বাঁচাতে চাইলে ১:৫ এ করতে পারেন।
☞ রেশিও ভেদে প্লাস্টারের স্ট্রেন্থ 3Mpa থেকে 10Mpa পর্যন্ত হয়ে থাকে [28 days]
✔ Mixing:-
এই ব্যাপারে পূর্বের একটা পোষ্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম। প্লাস্টারের মিশ্রণ হতে হবে সমসত্ত্ব, এ জন্য ড্রাই মর্টার/ মসলাকে কয়েকবার মিক্সিং করতে হবে [কমপক্ষে ২ বার] যেন বালির সাথে সিমেন্ট সম্পূর্নরুপে মিশ্রিত হতে পারে।.......দ্বিতীয় খন্ড দেখুন।

Popular

BariPlans chat with us on WhatsApp
Hello, How can I help you? ...
Click me to start the chat...