একজন সিভিল
ইঞ্জিনিয়ারের জন্য
অন্যান্য সাধারণ
কাজগুলোর মধ্যে
ব্রিক ওর্য়াক
হচ্ছে অন্যতম
একটি। আমাদের
দেশে আমরা
সাধারণত দুই
ধরনের ব্রিক
ওয়ার্ক করে
থাকি।
✅
Ordinary Brick Work:
যা আমাদের
দেশে সবচেয়ে
বেশি প্রচলিত,
এই ধরনের
কাজে ইট
দিয়ে গাথুনি
তৈরির পর
গাথুনি পৃষ্ঠকে
ড্যাম্প ও
আবহাওয়ার ক্ষতিকর
প্রভাব থেকে
রক্ষা এবং
সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য
প্লাস্টার দিয়ে
ঢেকে দেওয়া
হয়।
✅
Pointing Brick Work:
যেখানে ব্রিক
ওয়ালের জয়েন্টগুলোর
সৌন্দর্য প্রদর্শনের
জন্য ইহার
উপরে কোন
আস্তর বা
প্লাস্টার প্রদান
করা হয়না,
গাথুনি পরবর্তীতে
জয়েন্টগুলোকে পয়েন্টিং
করে দেওয়া
হয়। পয়েন্টিং
ব্রিক ওয়ার্ক
সচরাচর ১০
ইঞ্চির হয়ে
থাকে।
✅ ব্রিক ওয়ালের
প্রকারভেদ:
বিভিন্ন দেশে
বিভিন্ন ধরনের
ব্রিক ওয়াল
প্রচলিত হয়েছে,
তন্মধ্যে আমাদের
দেশে মূলতঃ
দুই ধরনের
ব্রিক ওয়ালের
বেশি প্রচলন
রয়েছে;
☑️
Stretcher Bond:
যা আমাদের
দেশে ৫” ব্রিক
ওয়াল নামে
পরিচিত, ইহা
পার্টিশন ওয়াল,
ইন্টারনাল বা
এক্সটার্নাল উভয়
ক্ষেত্রেই হয়ে
থাকে।
☑️
English Bond:
যা ১০
“ ব্রিক ওয়াল
নামে পরিচিত,
সচরাচর ইহা
বহি:স্থ
বা আউটার
দেওয়াল হিসেবে
প্রদান করা
হয়।
✅ এ ছাড়াও যেসব
ব্রিক ওয়াল
হয়ে থাকে:
ফ্লেমিশ বন্ড, হেডার বন্ড, ফেসিং বন্ড, রেকিং বন্ড, হেরিং বোন বন্ড, জিকজ্যাক বন্ড, Stack Bond, Dutch Bond ইত্যাদি।
……………………………………………………………….......
তো চলুন
জেনে নেওয়া
যাক গাথুনির
কাজ শুরুর
পূর্বেই আমাদেকে
যা যা
করতে হবে:-
🔺
ইট ভিজানো:
ইটকে ভালভাবে
ভিজাতে হবে
এবং কাজ
শুরুর ২৪
ঘন্টা পূর্বে
পানি থেকে
তুলে ফেলতে
হবে। মনে
রাখবেন ইট
যদি শুষ্ক
থাকে তবে
সিমেন্ট মসলার
পানি শুষে
নিবে, ফলশ্রুতিতে
পানির অভাবে
সিমেন্টের হাইড্রেশন
ক্রিয়া ব্যহত
হবে, যার
দরুন গাথুনি
দূর্বল হবে।
একই ভাবে
ইটের মধ্যে
অত্যাধিক পানি
থাকার কারণে
যা হতে
পারে;
☑️
সিমেন্ট মসলা
নরম হয়ে
জয়েন্ট থেকে
ইটের গা
বেয়ে পড়ে
যাবে। যার
দরুন জয়েন্টের
মসলার পুরুত্ব
খুবই কম
থাকবে।
☑️
গাথুনি ভার্টিক্যালি
শল আউটের
প্রবল সম্ভাবনা
থাকবে।
☑️
মিস্ত্রি কাজ
করতে অনীহা
প্রকাশ করবে,
সাধারণত অত্যাধিক
ভিজা ইটের
কারণে তাদের
হাতের স্কিন
ক্ষয় হয়ে
যায়।
🔺
বালি চালা
এবং ভিজানো:
যদিও সময়
এবং আর্থিক
দিক বিবেচনা
করে সচরাচর
আমরা এই
দুটো কাজ
করিনা, তবে
উত্তম কোয়ালিটি
পেতে হলে
বালিকেও ইটের
মত ভিজিয়ে
নিতে হবে,
সেই সাথে
চেলেও নিতে
হবে।
🔺
চিপিং:
অবশ্যই, অবশ্যই
এবং অবশ্যই
আপনাকে ব্রিক
ওয়ার্ক শুরুর
পূর্বে পুরাতন/
নতুন সকল
RCC সারফেস কে
ভালভাবে চিপিং
[ 2-3mm deep & 3/4 to 1” c/c distance] করে
নিতে হবে।
সেই সাথে
তা ভাল
করে #ভিজিয়ে
ও পরিস্কার
করে কাজ
শুরু করতে
হবে।
🔺
সিমেন্ট স্যান্ড
মসলা:
পানি দেওয়ার
পূর্বে শুষ্ক
সিমেন্ট ও
বালিকে ভালভাবে
মিক্সিং করে
নিতে হবে,
ভাল ফল
পেতে আমরা
সাধারনত শুষ্ক
মিশ্রনকে তিন
ধাপে নেড়ে
নেই, যাকে
মিস্ত্রির ভাষায়
তিন কাটা
বলে, তবে
কখনোই দুই
কাটার কম
হবেনা। মনে
রাখতে কেবল
মাত্র সমসত্ত্ব
মিশ্রনের ফলেই
মসলার সর্বোচ্চ
ফলাফল পাওয়া
সম্ভব।
☑️
আমরা সাধারণত
৫”
গাথুনিতে ১:৪ অথবা ১:৫ এ মসলা
প্রস্তুত করে
থাকি।
☑️
১০”
এর জন্য
১:৬
অথবা ১:৫ এ মসলা
প্রস্তুত করে
থাকি।
বি.দ্র:
মসলা প্রস্তুতের
৪৫ মিনিট
থেকে ১
ঘন্টার মধ্যে
শেষ করে
ফেলা উত্তম।
……………………………………………………………….......
🔺
কাজ চলাকালীন
সতর্কতা সমূহ:
🔘
লে আউট:
এ ক্ষেত্রে
আমরা সাধারণত
ড্রইং এর
মাপ অনুযায়ী
দরজার জন্য
নির্দিষ্ট ফাকা
রেখে প্রতি
রুমে এক
ইট করে
লে-আউট
গাথুনি করে
থাকি।
যেটা আগেই
বলেছি, চিপিং
এর পর
ফ্লোরকে ভালভাবে
পানি দিয়ে
ভিজিয়ে নিয়ে
পরিষ্কার করে
গাথুনির কাজ
শুরু করতে
হবে।
যদিও এটা
বই পুস্তকে
কোথাও দেখিনি,
তবে অধিকাংশ
ইঞ্জিনিয়ারগনই পুরাতন
RCC সারফেসে নতুন
গাথুনি বা
ঢালাই শুরুর
পূর্বে সিমেন্টের
#গ্রাউটিং সাজেস্ট
করে থাকেন
[আমিও ফলো
করি]।
গ্রাউটিং এর
বেলায় লক্ষ্য
রাখতে হবে
ইহা যেন
শুকিয়ে না
যায়, আদ্র
থাকা অবস্থাতেই
মসলা ফেলতে
হবে।
বিশেষ ভাবে
লক্ষ্য রাখতে
হবে ডায়াগোনাল
মাপ যেন
ঠিক থাকে
যদি রুমগুলো
স্কয়ার টাইপের
হয়, রুম
সাইজ একটু
কম বেশি
করে হলেও
দেওয়ালকে কলাম
এবং বিম
ফ্ল্যাশে রাখতে
হবে, না
হলে রুমের
ভিতর ১/২”
বা ১” অফসেট
বের হবে
যা দেখতে
দৃষ্টিকটু হবে।
🔘গাথুনির হাইট:
৫”
হলে একদিনে
বুক সমান
উচ্চতায় বা
সর্বোচ্চ ৪.৫ ফিট করতে
পারবে, ১০” হলে
৫ ফিট
পর্যন্ত করা
যাবে। এর
বেশি হলে
গাথুনি শল
আউট কিংবা
যে কোন
এক দিকে
হেলে পড়তে
পারে।
🔘
উলম্ব শল:
কাজ শুরু
থেকে শেষ
পর্যন্ত যে
কোন একটি
ইটকে ধরে
শল চেক
করতে হবে,
নচেৎ গাথুনি
শলে থাকবেনা।
দেখা যায়
অনেক মিস্ত্রি
এক সময়
এক ইটে
শল ধরে,
এতে করে
গাথুনি বাকা
হবার সম্ভাবনা
থাকে। এখানে
যেটা করা
যেতে পারে,
প্রথম ধাপে
সবার নিচের
ইটকে শলে
রেখে পরবর্তীতে
৪.৫
ফিটের মাথায়
আরেকটিকে স্থির
করে অবশিষ্ট
গাথুনি শেষ
করতে হবে।
🔘
মসলার জয়েন্ট:
মসলার জয়েন্টে
হরিজনটালি এবং
ভার্টিক্যালি ১/২”
বা 12mm করে মসলা বা
মর্টার দিতে
হবে এবং
ইহা সর্বত্র
একই থাকবে।
🔘
লেভেল:
যদি মসলার
জয়েন্টে একই
পুরুত্বের মসলা
দেওয়া হয়
তবে গাথুনি
লেভেলে থাকবে,
বিশেষ করে
৭ ফিটে
গিয়ে অবশ্যই
গাথুনির লেভেল
করে নিতে
হবে, না
হলে লিল্টেন
বসাতে অসুবিধে
হবে।
🔘
জয়েন্টে মসলার
ছিদ্র বা
ভয়েড:
গাথুনির কাজে
এটা কোন
ভাবেই এলাউ
না, অনেক
সময় দেখা
যায় মসলা
দেওয়ার পরও
জয়েন্টের ভিতরের
ছিদ্র দিয়ে
এপাশ থেকে
ওপাশের সব
দেখা যায়😄। মনে রাখবেন
ইহা অবশ্যই
পরিহার করতে
হবে, না
হলে যা
হবে;
☑️
গাথুনি দূর্বল
হবে❗️
☑️
প্লাস্টারের পরও
ফাঁকা দিয়ে
পানি প্রবেশ
করে দেওয়ালকে
আদ্র করবে,
ফলশ্রুতিতে পেইন্ট
নষ্ট হয়ে
যাবে❗️
সুতরাং এই
ফাঁকা বা
ছিদ্র বন্ধের
জন্য ঠেলা
গাথুনি Allow করবেন না,
মিস্ত্রিকে অবশ্যই
জয়েন্টে কর্নি
দিয়ে মসলা
কুপিয় দিতে
বলবেন এবং
ইটের উপরে
ও পার্শ্বে
কর্নি দিয়ে
হালকা আঘাত
করে গাথুনি
করতে বলবেন।
🔘
ফ্ল্যাশ সাইড:
আউটার দেওয়ালের
ক্ষেত্রে বাহিরের
দিকে ফ্লাশ
রাখা উত্তম,
এতে করে
প্লাস্টারের পুরুত্ব
ঠিক রাখা
যায়, সর্বপরি
বাহির থেকে
দেখতেও সুন্দর
লাগে।
🔘
ফ্রগমার্ক:
ইটের ফ্রগমার্ক
বা সিল
সব সময়
উপরের দিকে
থাকবে, এতে
করে দুই
ইটের মাঝে
উত্তম বন্ডের
সৃষ্টি হয়।
🔘
বিমের নিচের
গাথুনি বা
সর্বশেষ গাথুনি:
সর্বশেষ গাথুনি
বা বিমের
নিচের গাথুনিকে
করার সময়
খেয়াল রাখতে
হবে যাতে
ফাকা না
থাকে, যদি
খুব বেশি
ফাকা থাকে
তবে মসলার
সাথে ইটের
টুকরা ঢুকিয়ে
দিবেন। না
হলে পরবর্ততে
RCC এর সাথে
প্লাস্টার ছেড়ে
দিয়ে বিমের
নিচে ফাটলের
ন্যায় দেখাবে।
🔘
মাটাম বা
টুথিং:
কোন দেওয়ালে
সাথে আড়াআড়ি
বা 90 ডিগ্রি এ্যাংগেলে
নতুন গাথুনি
করার জন্য
প্রতি এক
ইট পর
পর ইটকে
কিছুটা বর্ধিত
রাখাকে টুথিং
বলে, যাকে
মিস্ত্রিরা মাটাম
বলে। উত্তম
বন্ডিং এর
জন্য ইহার
বিকল্প নেই।
🔘
পুটলগ বা
ডগনার ছিদ্র:
৫ ফিটের
উপরে গাথুনি
কিংবা ছাদ
ও দেওয়ালের
প্লাস্টারের জন্য
মিস্ত্রিরা ১২/১৩ ইটের লেয়ারে
কিছু দূর
পর পর
যে ফাকা
রাখে তাকে
পুটলগ বলে,
মিস্ত্রিদের ভাষায়
যাকে ডগনার
ছিদ্র বলে।
উপরের কিংবা
বাহিরের কাজ
শেষ হলে
প্লাস্টারের পূর্বে
অবশ্যই ইহাকে
ব্রিক দ্বারা
ভালভাবে ভরাট
করে দিতে
হবে, না
হলে এখান
দিয়ে লিকেজের
সম্ভাবনা থাকে❗️
🔘
ঝাড়ু বা
পরিষ্কার:
খুব সুন্দর
করে ঝাড়ুর
মাথাকে চেপে
ধরে জয়েন্টগুলো
হরিজনটালি এবং
ভার্টক্যালি ঝাড়ু
দিয়ে দিবেন,
তাতে করে
দেখতে সুন্দর
লাগবে ও
ফাকা বা
ছিদ্র থাকলে
তা ভরাট
হয়ে যাবে।
🔘
লিন্টেল ও
দরজার সাটারিং:
কখনোই গাথুনি
শক্ত হবার
পূর্বে তার
সাথে সাটারিং
করতে দিবেন
না, তাতে
করে গাথুনিতে
ফাটল দেখা
দিতে পারে।
🔘
কিউরিং:
প্রতিদিন দুইবেলা
করে ৭
থেকে ১৪
দিন কিউরিং
করবেন।